সংবাদচর্চা রিপোর্ট
দেশ স্বাধীনের পর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান হন আলী আহাম্মদ চুনকা। একটানা দুইবার চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। এরপর এ চেয়ারে আসেন নাজিমউদ্দিন মাহমুদ। দীর্ঘ দিন নির্বাচন বন্ধ থাকার পর ২০০৩ সালে চেয়ারম্যান হন সেলিনা হায়াৎ আইভী। পরবর্তীতে সিটি কর্পোরেশন গঠিত হলে একটানা দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়ে এখনও দায়িত্ব পালন করছেন আইভী।
১৮৭৬ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। তবে প্রথম বাঙ্গালী চেয়ারম্যান হয় ১৯৫১ সালে। যার নাম সৈয়দ মোহাম্মদ মালেহ। তার নামেই টানবাজারের এসএম মালেহ রোড নামকরণ করা হয়েছে।
দেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত পৌরসভার নির্বাচনে প্রথম চেয়ারম্যান হন আওয়ামী লীগ নেতা আলী আহাম্মদ চুনকা। ১৯৭৭ সালে তিনি পুনরায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে পৌর পিতা হিসেবে পরিচিতি পান। তবে ১৯৮৪ সালে তারই ¯েœহধন্য এক সময়ের ছাত্রলীগ নেতা নাজিম উদ্দিন মাহমুদের কাছে হেরে যান চুনকা। পরবর্তীতে নাজিম উদ্দিন মাহমুদ চার বছর নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদ সরকারের আমলে সীমনা জটিলতা মামলার কারনে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে প্রশাসন থেকে কাউকে প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়ে এ পৌরসভা পরিচালনা করা হতো। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে নির্বাচন ছাড়াই আওয়ামী লীগ নেতা আবু হাসনাত মো. শহিদ বাদল কিছু দিনের জন্য বেসরকারী প্রশাসক হয়েছিলেন। পরে হাইকোর্টে রিট হলে তার পদ চলে যায়।
দীর্ঘ দিন পর ২০০৩ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন হয়। এ নির্বাচনে আলী আহাম্মদ চুনকার কন্যা ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বিএনপির প্রার্থী নূরুল ইসলাম সরদারকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
২০১১ সালের ০৫ মে নারায়ণগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ ও কদমরসুল পৌরসভাকে একীভুত করে স্থানীয় নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন গঠন করা হয়। একই বছর নির্বাচনে শামীম ওসমানকে লক্ষাধিক ভোটে পরাজিত করে দেশের প্রথম নারী মেয়র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ডা. সেলিনা হায়াৎ। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ২য় সিটি নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খানকে হারিয়ে ফের মেয়র হয়ে এখনও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। দেশ স্বাধীনের পর পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান-মেয়র যে ক’জন হয়েছেন তারা সবাই দেওভোগের বাসিন্দা। আলী আহাম্মদ চুনকা পশ্চিম দেওভোগ এলাকার আর নাজিম উদ্দিন মাহমুদ দেওভোগ পাক্কা রোড এলাকার। তবে দেওভোগ এলাকা থেকে এ পদ ছিনিয়ে নিতে বারবার চেষ্টাও চালানো হয়েছে। এখনও সে চেষ্টা অব্যহত রয়েছে বলে মনে করেন রাজনীতি সচেতন মহল। তাদের মতে, শহরের একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবার বরাবরই এ চেষ্টা করে যাচ্ছেন।